কনটেন্টটি শেয়ার করতে ক্লিক করুন
অর্থনৈথিক কর্মকাণ্ডে কক্সবাজার
মৎস্য শিল্পঃ
কক্সবাজার সদর উপজেলার গ্রামীন কৃষিজীবি পরিবারের ১৮ শতাং ট্রলার অথবা নৌকায় করে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। এখানে আহরিত মাছ সারাদেশে সরবরাহের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানী করা হয়ে থাকে। অনেকে জীবিকার তাগিদে সাগর তীরে চিংড়ী মাছের পোনা ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। অর্থনৈতিক গুরত্ব সম্পন্ন স্বাদু ও নোনা জলের মৎস্য প্রজাতি সমূহ এ অঞ্চলে পাওয়া যায়। উল্লেখ্য যে, উক্ত এলাকার লবণাক্ত পানি মৎস্য চাষের জন্য উপযোগী। এ উপজেলার সাগর,মোহনা, খাল, নদী, বিল, খাঁড়ি থেকে ধান চাষের সময় এবং বর্ষাকালে প্রচুর মাছ ধরা হয়। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মৎস্য চাষের মাধ্যমে দেশীয় চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি ব্যাপক কর্মসংস্থান সম্ভব।
চিংড়ি শিল্পঃ
উপকূলীয় জমিতে ব্যাপক ভিত্তিতে চিংড়ি চাষ হয়। এখানকার উৎপাদিত বাগদা ও গলদা চিংড়ি স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। এই উদ্দেশ্যে স্থানীয় ভাবে গড়ে উঠেছে চিংড়ি পোনা উৎপাদন শিল্প (হ্যাচারী) ও চিংড়িজাত খাবার তৈরী শিল্প। এই শিল্পের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
লবন শিল্পঃ
১৯৪৭ সালে কক্সবাজার সদর উপজেলার গোমাতলী মৌজাতে এক ব্যক্তি ১২০ একর জমি দীর্ঘ মেয়াদী বন্দোবস্ত নিয়ে লবণ চাষ শুরু করেছিলেন। সে থেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লবন উৎপাদনের যাত্রা শুরু হয়। লবণ চাষীরা সাধারণত দরিদ্র এবং অন্যের কাছ থেকে জমি নিয়ে লবণ চাষ করে। লবণ চাষীদের অধিকাংশ সাগরের তীরে কাছাকাছি এলাকায় বাস করে। এবং তাদেরকে প্রতিনিয়তই বৈরী প্রাকৃতিক পরিবেশ মোকাবিলা করতে হয়।
শুটকি শিল্পঃ
কক্সবাজার সদর উপজেলা প্রচুর পরিমানে শুটকি তৈরী করা হয়। শুকনো মৌসুমে উপজেলার মাছের জাত বিচারেও শুটকি তৈরীর উঠোন,জেটি সংলগ্ন এলাকায় মাটির উপর বা পাটি বিছিয়ে বা বাঁশের মাচায় রোদে দেয়। এই পদ্ধতিতে শুটকি মাছ পোকামাকড়ে আক্রান্ত হয়। সাম্প্রতিক সময়ে এখানে সোলার টানেল ড্রায়ার পদ্ধতিতে শুটকি তৈরী শুরু হয়েছে। এ সকল শুটকি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানি করে বাংলাদেশ মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। উল্লেখযোগ্য যে, বঙ্গোপসাগরের আহরিত মাছের ২৫-৩০ শতাংশ শুটকিতে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। আহরিত মৎস্যজাত দ্রব্য যথাঃ সার্ক ফীন, ফীস লিভার অয়েল, এয়ার বস্নাডার ইত্যাদি শুকিয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হয়।
হস্ত শিল্প
ঐতিহ্যগতভাবে কক্সবাজার হস্তশিল্প সমৃদ্ধ।আরাকান বংশোদ্ভূত রাখাইনরা নানাবিধ হস্তশিল্পে নিয়োজিত।এদের তৈরী বিভিন্ন রকমের কাপড়, তৈরী পোষাক, তোয়ালে, ব্যাগ ইত্যাদি দেশে ও বিদেশে ব্যাপকভাবে সমাদৃত।এ ছাড়া রাখাইনদের উৎপাদিত কাষ্ঠ নিমির্ত নর-নারী ও পশুপাখির নানা রকম ভাস্কয্য, ঝিনুক ও শংখজাত সামগ্রীর বিশেষ চাহিদা রয়েছে।
কাকড়া
রপ্তানীযোগ্য মৎস্যজাত পণ্যের ক্ষেত্রে চিংড়ির পরে কাকড়া দ্বিতীয় স্থানে আছে।কাকড়া আহরণ ও বিক্রির মধ্যবর্তী পর্যায়ে কাকড়া মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি জেলার কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতির উন্নয়নে বিপুল সম্ভাবনার সূচনা করেছে।
পর্যটন শিল্প
সৈকত নন্দিনী কক্সবাজার জেলা বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা।প্রতি বছর এ জেলায় দেশী-বিদেশী অসংখ্য পর্যটক আগমন করেন।এখানে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম বালুকাময় সাগর সৈকতসহ নানারূপ দর্শনীয় ও প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন।পর্যটকদের সুবিধা বৃদ্ধির স্বার্থে সী-বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি গত প্রায় ৩ বছর যাবৎ নিয়মিত ভাবে বিভিন্ন অবকাঠামোগত সুবিধা প্রদান করেছে।পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে এখানে পাঁচ তারকা বিশিষ্ট হোটেলসহ শতাধিক মোটেল স্থাপিত হয়েছে।এ জেলায় পর্যটন শিল্পের বিকাশের ফলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
খনিজ সম্পদ
১২০ কিঃমিঃ দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতের বালিতে প্রায় ৮ ধরণের Heavy Mineralপাওয়া সম্ভব।বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ১৭টি জায়গায় এই Heavy Mineralএর সন্ধান পাওয়া যায়।১৯৬৭ সালের দেশীয় ও অস্ট্রেলীয় ভূতত্ত্ববিদের একটি দল প্রায় এক দশক যাবৎ গবেষণা করে দেখেন যে, কক্সবাজারের প্রায় ১১৫৯ বর্গ কিঃমিঃ এলাকা জুড়ে রয়েছে জিরকন, ইলমেনাইট, ম্যাগনেটাইট, কয়নাইট, মোনাজাইট এর মত মূল্যবান খনিজ পদার্থ ।এসব খনিজ পদার্থ প্রক্রিয়াজাত করা গেলেো তা দেশের খনিজ সম্পদ বিকাশের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে
বিদেশে কর্মসংস্থান
কক্সবাজার উপজেলার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যক্তি মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে নানাবিধ কার্যোপলক্ষ্যে অবস্থান করছে।এতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস